জিয়াউর রহমানকে প্রদান করা স্বাধীনতা পদক প্রত্যাহার বাতিলের সিদ্ধান্ত।
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা পুরস্কার, যা ২০০৩ সালে প্রদান করা হয়েছিল, তার বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়েছে। একইসঙ্গে সরকার স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২৫-এর জন্য নির্বাচিত ব্যক্তিদের নাম ঘোষণা করেছে। মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ বছর ৭ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২৫’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
এ বছরের স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন—
- বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর)
- সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর)
- সংস্কৃতিতে নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর)
- সমাজসেবায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ (মরণোত্তর)
- মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (মরণোত্তর)
- শিক্ষা ও গবেষণায় বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর
- প্রতিবাদী তারুণ্যে আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা পুরস্কার বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় এবং জাতীয় জাদুঘর থেকে তার পদক ও সম্মাননাপত্র সরিয়ে ফেলে। তবে এবার সেই পদক পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউনূস সরকার।
এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা পুরস্কার পুনর্বহাল হলো, যা তার মুক্তিযুদ্ধে অবদান ও বাংলাদেশের স্বাধীনতায় নেতৃত্বের স্বীকৃতির পুনঃপ্রতিষ্ঠা হিসেবে দেখা হচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এ সিদ্ধান্ত দেশের ইতিহাসের প্রতি ন্যায়ের প্রতিফলন এবং বিতর্কিত সিদ্ধান্তগুলোর পুনর্বিবেচনার একটি দৃষ্টান্ত।
সরকারি সূত্রগুলো জানিয়েছে, জাতীয় জাদুঘর থেকে সরিয়ে ফেলা জিয়াউর রহমানের পদক ও সম্মাননাপত্র যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। একইসঙ্গে স্বাধীনতা পুরস্কার সংক্রান্ত অতীত সিদ্ধান্তগুলো পর্যালোচনার উদ্যোগ নেওয়া হতে পারে।
এদিকে, স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২৫-এ মনোনীত ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের কৃতিত্বপূর্ণ অবদানকে স্বীকৃতি জানানো হচ্ছে, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে উৎসাহিত করবে।
রাজনৈতিক মহলে এ সিদ্ধান্ত নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিএনপি একে ‘সঠিক ও সময়োপযোগী’ বলে অভিহিত করলেও, আওয়ামী লীগ এ সিদ্ধান্তকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মন্তব্য করেছে। তবে সাধারণ জনগণের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে, যেখানে অনেকেই মনে করছেন, ইতিহাসের প্রকৃত চিত্র উপস্থাপন করা উচিত এবং মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখা ব্যক্তিদের যথাযথ সম্মান দেওয়া প্রয়োজন।
এ বিষয়ে সরকারিভাবে বিস্তারিত ব্যাখ্যা আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
Post a Comment